ভবনা ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আজকে বাংলাদেশ একটি অঙ্গীকারে আবদ্ধ। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেই বাংলাদেশে কোনো ধরনের জুলুম হবে না, শোষণ হবে না, নিপীড়ন হবে না। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম নিবে না। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না, যেখানে আমরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবো না, যেখানে দুর্নীতির দুর্গন্ধও থাকবে না। ঘুষের যাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়ে কোনো নাগরিক কাঁদবে না। বিচারের বাণী আর নিভৃতে কাঁদবে না, বিচার না পেয়ে কেউ আত্মহত্যা করবে না। সেই চিত্র আর আমরা বাংলাদেশে দেখতে চাই না। এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে দল-ধর্মের অধিকারের ব্যাপারে কোনো ব্যবধান থাকবে না। দেশের প্রতিটি নাগরিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ ময়দানে মহানগরী জামায়াত আয়োজিত বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
মহানগরী আমীর কামরুল আহসান এমরুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি শহীদুল্লাহ কায়সারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বাংলাদেশকে আল্লাহর বিধান এবং সুন্নাহর ভিত্তিতে দেখতে চাই। নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. প্রতিষ্ঠিত মদিনার নগর রাষ্ট্রটি ছিল লিখিত সংবিধানের ভিত্তিতে দুনিয়ার প্রথম আধুনিক রাষ্ট্র। এর আগে দুনিয়ার কোনো রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান ছিল না। মদিনা কেন্দ্রিক নগররাষ্ট্র থেকেই দুনিয়ার প্রথম লিখিত সংবিধানের জন্ম। এখান থেকেই হিউম্যান চার্টার্ড তৈরি হয়েছে এবং এটাকে চ্যালেঞ্জ করার দুঃসাহস দুনিয়ার কোনো মতবাদের নেই। মদিনার এই সনদের মাধ্যমেই সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, জাতির সাথে বেঈমানী করলে সে যেই ধর্মের লোকই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে। বিশ্বাসঘাতকদের দুনিয়ার কোনো রাষ্ট্রই ক্ষমা করে না। কারণ এটা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। মূল সার্বভৌমত্বের মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। তিনি পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘হে নবী, আপনি দুনিয়ার মানুষকে জানিয়ে দিন, তিনিই (আল্লাহ) হচ্ছেন দুনিয়ার সকল বাদশাহর মালিক। আসমান-জমিনের একক কর্তৃত্ব একমাত্র তারই।’
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা ধরে নিয়েছিলেন এবং তাদের অহংকারে আমাদের মনে হয়েছিল তারা কিয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। তারা দেশের মজলুম মানুষকে নিয়ে উপহাস করতেন। তারা দেশপ্রেমিক লোকদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে উল্লাস প্রকাশ করেছেন, মিষ্টি বিতরণ করেছেন। তবে তারা আল্লাহর সঠিক বিচার পেয়েছেন।
তিনি ময়মনসিংহবাসীদের আশ্বস্ত করে বলেন, আল্লাহর মানবিক বিধান কায়েমে আমরা সকলে এক। আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমাদের আল্লাহ এক, নবী এক। আমাদের জীবন বিধান এক। তার ভিত্তিতেই ঐক্যের বাংলাদেশ গড়ব ইনশআল্লাহ। এতে কোনো বাধা-বিপত্তি মানব না। কোনো বাধার মুখে থেমে যাব না।
তিনি বলেন, আমরা কোনো অন্যায়ের সাথে আপস করব না। আমাদের একমাত্র ভরসা আল্লাহর ওপর। সুতরাং আমরা ভয় করব একমাত্র আল্লাহকে। আমি বলতে চাই, কেউ যেন আমাদের দিকে চোখ তুলে না তাকায়। যুগে যুগে নবী-রাসূল আলাইহিস সাল্লামগণ এবং তাদের অনুসারীগণ অসত্যের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই সংগ্রাম করে জীবন দিয়েছেন, তবু কারো কাছে মাথা নত করেননি। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। ঐক্যের শক্তিতেই বিজয় আসবে ইনশাআল্লাহ। কোনো ব্যক্তি বা দলকে ক্ষমতায় বসানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।
0 coment rios: